BDNow24 News

বাসর রাতে বিড়াল মারা কি?

একদা বাগদাদের বাদশাহর ছিল দুই কন্যা। এই দুই রাজকন্যা ছাড়া তার ছিলনা কোনো রাজপুত্র। বাদশাহ রাজকন্যাদের অনেক ভালবাসত, অনেক আদর করত। দুই রাজকন্যার জন্যে সবসময় দশ পনেরো জন দাসী প্রস্তুত থাকতো। কখন কোন রাজকন্যার কি দরকার হবে আর তারা হুকুম পালন করবে।
দুই রাজকন্যারই একটা করে বিড়াল ছিলো। বিড়াল দুটো ছিলো তাদের সবসময়ের সাথী। তারা খেতে বসলে এমনকি ঘুমাতে গেলেও ঐ বিড়াল দুটো সাথে সাথে থাকত।
তো দেখতে দেখতে দুই রাজকন্যাই একসময় বড় হয়ে গেলো। তারা বিয়ের উপযোগী হলো। বাদশাহর চিন্তা বাড়তে লাগল, কারণ জামাইদের উপরেই তার এই বিশাল রাজ্যের দায়িত্ব দিয়ে যেতে হবে। সুতরাং এমন যোগ্য দুজন ছেলে খুঁজে বের করতে হবে।
সারা রাজ্যে অনেক খোঁজাখুঁজি করে এমন দুইভাই পাওয়া গেলো যাদের কাছে রাজকন্যাদের বিয়ে দেয়া যায় বলে বাদশাহর মনে হলো। তারপর অনেক ধুমধাম করে বিয়ে হলো দুই রাজকন্যার। অতঃপর বাদশাহ দুই মেয়ে জামাইকে সমানভাবে রাজ্যের দায়িত্ব ভাগ করে দিলেন।
এরপর দুই ভাই রাজ্য চালনা নিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়লো। দুইজনের অনেক দিন দেখা সাক্ষাৎ নেই। হঠাৎ করেই রাজ্যের একটা বড় অনুষ্ঠানে দুই ভাইয়ের দেখা হয়ে গেলো। তারপর দুইজনই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লো। তারপর অনেক কথায় কথায় ছোট ভাই জিজ্ঞাসা করলো তাদের বৌ মানে রাজকন্যাদের কথা। তখন বড় ভাই বলল হুম, বড় রাজকন্যা তাকে অনেক সমীহ করে চলে। তার কোনো কাজই করা লাগে না। ইত্যাদি ইত্যাদি।
এইসব শুনে ছোটভাই বলল ছোট রাজকন্যা তার কোনো যত্নই করে না। সবসময় রাগা রাগি করে এমনকি মাঝে মাঝে গায়েও হাত তুলে। সে তখন বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে রাজকন্যাকে বশ করল? তখন বড় ভাই বলল, রাজকন্যার বিড়ালের কথা। ছোট ভাই বলল হ্যাঁ ওই বিড়ালকে তো আমার চাইতেও বেশি যত্নে রাখে। বড়ভাই বলল, হ্যাঁ, প্রথম দিন বাসর রাতে ঘরে ঢুকেই আমি একটা তরবারি দিয়ে ওই বিড়ালের ওপরে দিলাম এক কোপ। ব্যাস একবারে দুইভাগ। এই ঘটনায় বড় রাজকন্যা ভাবলো আমি মনেহয় অনেক বড় কোনো বীর, এরপর থেকেই সে আমাকে অনেক সমীহ করে চলে।
তো এই কথা শুনে ছোটভাই মনে মনে ভাবলো ঠিক আছে আজকে বাড়ী ফিরেই বিড়ালের জীবননাশ করা লাগবে।
…. অনেকদিন পরে দুই ভাইয়ের দেখা। এবার ছোট ভাইয়ের শরীরে অনেক কাটা দাগ। বড়ভাই জিজ্ঞাসা করলো কি খবর কোনো যুদ্ধে আহত হয়েছিলে নাকি? ছোটভাই বলল, না ভাই তোমার ঘটনা শুনে আমি ওইদিন বাসায় গিয়ে তরবারি নিয়ে এক কোপে বিড়ালটাকে দুইভাগ করে দিলাম। কিন্তু আমার বেলায় ঘটনা উলটো হল। আমাকে এর শাস্তিস্বরূপ একমাস কারাবন্দি আর অত্যাচার ভোগ করা লাগলো।
তখন বড়ভাই বলল, বিড়াল বাসর রাতেই মারতে হয়, পরে মারলে কোনো লাভ নাই।
প্রকৃতপক্ষে বাসর রাতে বিড়াল মেরে কিছু হয়না। এগুলো শুধুই গল্প কথা…. এর সাথে ইসলামের দূরতমও কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অহেতুক কুসংস্কার থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিৎ।
Previous
Next Post »
Thanks for your comment