সাব্বিরকে কাছ থেকে দেখি সম্ভবত ২০০৯ সালের দিকে। একাডেমি টিমের
ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছিলাম ওই সময়টাতে। তখন কয়েকটা ছেলে দেখে মনে হয়েছিল, ভবিষ্যতে জাতীয়
দলে আসতে পারে। তাদের মধ্যে ছিল নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান,
শুভাগত হোমসহ আরও কয়েকজন। এদের খুব সম্ভাবনাময় মনে হয়েছিল। এর
মধ্যে নাসির দ্রুতই জায়গা করে নিল জাতীয় দলে। সাব্বির একটু সময় নিয়েছে। ওর আসলে আরও
আগে দলে আসা উচিত ছিল। যে কারণেই হোক, একটু সময় লাগল জাতীয় দলে আসতে। তবে কখনো কখনো সময় নেওয়ার প্রয়োজন
আছে। তাতে পরিণত হয়ে আসা যায়।
সাব্বিরকে প্রথম দেখায় মনে হয়েছিল ছেলেটা লড়াকু। ভীষণ সাহস নিয়ে খেলার মানসিকতা রয়েছে। ও সেই ধরনের খেলোয়াড়, যে মাথা উঁচু করে, প্রতিপক্ষের দিকে চোখে চোখ রেখে খেলতে পারে। সেই সিরিজটা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা একাডেমির বিপক্ষে। দলটা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। কারণ, ডেভিড মিলারের মতো বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় ছিল প্রোটিয়া দলে। মাঠে তাঁদের স্লেজিং, শারীরিক ভাষা এবং সামর্থ্যে মিলারদের ওই দলটা বেশ এগিয়েই ছিল। সেই দলের বিপক্ষে দারুণ লড়েছিল সাব্বির। মনে হয়েছিল, ছেলেটার ভেতর বারুদ আছে!
অতঃপর সে নিরাশ করেনি। একটু দেরি হলেও নিজের জাত চেনাতে শুরু করেছে। তবে মনে রাখা প্রয়োজন, এখনো যেতে হবে অনেক দূর। সত্যিকারের ক্যারিয়ার শুরু হলো মাত্র। বেশ কিছু টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সে খেলেছে। তবে এই বিশ্বকাপের পরই তার আসল ক্যারিয়ার শুরু হলো। সামর্থ্য আছে অনেক দূরে যাওয়ার। সে দুর্দান্ত ফিল্ডার, সাহসী ব্যাটসম্যান। দেওয়ার আছে অনেক কিছুই। এ ধরনের খেলোয়াড় দলের বিরাট সম্পদ।
বিশ্বকাপে সাব্বিরের সাফল্য প্রসঙ্গে বলতে গেলে, ওর সামর্থ্য নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। সাব্বিরের সমস্যা ছিল, ঘরোয়া ক্রিকেটে সে ব্যাটিং করত শেষের দিকে। এ কারণেই হয়তো নিজের ব্যাটিং-সামর্থ্য প্রকাশের সুযোগ সেভাবে পেত না। ভালো খেলোয়াড় হিসেবে বেশির ভাগ বড় দল ওকে নিত ঠিকই। তবে নিজের পছন্দের পজিশনে ব্যাটিং করতে পারছিল না। ওকে পরামর্শ দিয়েছিলাম, ছোট দলে খেলো, ওপরের দিকে ব্যাটিং করার সুযোগটা মিলবে। ক্লাব বাছাই করতেই ওর কিছু সময় চলে গিয়েছে। কিংবা যেসব ক্লাবে সে খেলেছে, তারা যদি ঠিকমতো তাকে ব্যবহার করতে পারত, তাহলে আর আগেও ভালো পারফর্ম করে জাতীয় দলে চলে আসতে পারত।
যাহোক, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে বিশ্বকাপে ওর পারফরম্যান্স অনুমিতই ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি-গতিময় উইকেটে সাব্বিরের দারুণ পারফরম্যান্স আমাকে মোটেও অবাক করেনি। কেন? ফাস্ট বোলিং খেলতে সাব্বির একদমই ভয় পায় না। উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ফাস্ট বোলিংয়ে সব সময় স্বচ্ছন্দ নয়। কিন্তু সে ফাস্ট বোলিং খুব ভালো খেলে। ওই ধরনের উইকেটে বল ভালো ব্যাটে আসে বলে সাব্বিরের মতো ব্যাটসম্যানদের আদর্শ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার উইকেট। ওই উইকেটে তারা ভালো স্ট্রোক খেলতে পারে। আমাদের উইকেট ভিন্ন। বল আসে মন্থর গতিতে, নিচু হয়ে। কখনো টার্ন থাকে। এ কারণে আমাদের উইকেটে সাব্বিরের মতো ব্যাটসম্যানদের খেলতে একটু অসুবিধা হয়।
আমরা জানি, ব্যাট-বল দুটোতেই সে স্বচ্ছন্দ। তবে বোলিংয়ের কথা বললে, শুরুতে নিয়মিত বোলিং করত। বোলিংটা তখন ভালোই ছিল। কিন্তু দলের চাহিদা মেনে ক্রমেই ব্যাটিংয়ে নজর দেওয়ায় বোলিং আগের মতো নিয়মিত করা হয় না।
নিঃসন্দেহে বোলিংয়ের চেয়ে তার ব্যাটিং ভালো। আরেকটি বিশেষ গুণ, অসাধারণ ফিল্ডার। আরেকটু পরিশ্রম করলে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হতে পারবে। সাব্বিরের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক স্ট্রোক খেলার সামর্থ্য। যেকোনো পরিস্থিতিতে স্ট্রোক খেলতে পারে। ব্যাটিংয়ের সময় ওর মাথা বেশ ঠান্ডা। ব্যাটিংয়ে বড় দুর্বলতার কথা বললে, পর্যাপ্ত সিঙ্গেলস নিতে পারে না। প্রচুর সিঙ্গেল বের করতে পারলে বড় রান করতে পারবে। তাতে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা থাকবে। চার-ছয় মারতে যতটা পারঙ্গম, সিঙ্গেলসে ততটা নয়। আশা করি, এ দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে উঠবে।
ব্যক্তিগতভাবে সাব্বিরকে নিয়মিত টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবে দেখতে চাইব। আমার বিশ্বাস, টেস্টে সে অনেক ভালো করতে পারবে। তবে সে জন্য তাঁকে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে আরও ভালো করতে হবে। যে ধরনের ব্যাটিং সে করে, তাতে ফার্স্ট ক্লাসে আরও বড় রান পাওয়ার কথা। টেস্টের জন্য সে ফিট। টেকনিক ভালো আছে। এখন এ সংস্করণের জন্য মেজাজ-মানসিকতায় আরও উন্নতি করতে হবে। তাতে টেস্ট দলেও জায়গা করে নিতে পারবে। প্রত্যাশা করি, ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই ভালো করতে পারবে সাব্বির।
সাব্বিরকে প্রথম দেখায় মনে হয়েছিল ছেলেটা লড়াকু। ভীষণ সাহস নিয়ে খেলার মানসিকতা রয়েছে। ও সেই ধরনের খেলোয়াড়, যে মাথা উঁচু করে, প্রতিপক্ষের দিকে চোখে চোখ রেখে খেলতে পারে। সেই সিরিজটা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা একাডেমির বিপক্ষে। দলটা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। কারণ, ডেভিড মিলারের মতো বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় ছিল প্রোটিয়া দলে। মাঠে তাঁদের স্লেজিং, শারীরিক ভাষা এবং সামর্থ্যে মিলারদের ওই দলটা বেশ এগিয়েই ছিল। সেই দলের বিপক্ষে দারুণ লড়েছিল সাব্বির। মনে হয়েছিল, ছেলেটার ভেতর বারুদ আছে!
অতঃপর সে নিরাশ করেনি। একটু দেরি হলেও নিজের জাত চেনাতে শুরু করেছে। তবে মনে রাখা প্রয়োজন, এখনো যেতে হবে অনেক দূর। সত্যিকারের ক্যারিয়ার শুরু হলো মাত্র। বেশ কিছু টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সে খেলেছে। তবে এই বিশ্বকাপের পরই তার আসল ক্যারিয়ার শুরু হলো। সামর্থ্য আছে অনেক দূরে যাওয়ার। সে দুর্দান্ত ফিল্ডার, সাহসী ব্যাটসম্যান। দেওয়ার আছে অনেক কিছুই। এ ধরনের খেলোয়াড় দলের বিরাট সম্পদ।
বিশ্বকাপে সাব্বিরের সাফল্য প্রসঙ্গে বলতে গেলে, ওর সামর্থ্য নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। সাব্বিরের সমস্যা ছিল, ঘরোয়া ক্রিকেটে সে ব্যাটিং করত শেষের দিকে। এ কারণেই হয়তো নিজের ব্যাটিং-সামর্থ্য প্রকাশের সুযোগ সেভাবে পেত না। ভালো খেলোয়াড় হিসেবে বেশির ভাগ বড় দল ওকে নিত ঠিকই। তবে নিজের পছন্দের পজিশনে ব্যাটিং করতে পারছিল না। ওকে পরামর্শ দিয়েছিলাম, ছোট দলে খেলো, ওপরের দিকে ব্যাটিং করার সুযোগটা মিলবে। ক্লাব বাছাই করতেই ওর কিছু সময় চলে গিয়েছে। কিংবা যেসব ক্লাবে সে খেলেছে, তারা যদি ঠিকমতো তাকে ব্যবহার করতে পারত, তাহলে আর আগেও ভালো পারফর্ম করে জাতীয় দলে চলে আসতে পারত।
যাহোক, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে বিশ্বকাপে ওর পারফরম্যান্স অনুমিতই ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি-গতিময় উইকেটে সাব্বিরের দারুণ পারফরম্যান্স আমাকে মোটেও অবাক করেনি। কেন? ফাস্ট বোলিং খেলতে সাব্বির একদমই ভয় পায় না। উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ফাস্ট বোলিংয়ে সব সময় স্বচ্ছন্দ নয়। কিন্তু সে ফাস্ট বোলিং খুব ভালো খেলে। ওই ধরনের উইকেটে বল ভালো ব্যাটে আসে বলে সাব্বিরের মতো ব্যাটসম্যানদের আদর্শ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার উইকেট। ওই উইকেটে তারা ভালো স্ট্রোক খেলতে পারে। আমাদের উইকেট ভিন্ন। বল আসে মন্থর গতিতে, নিচু হয়ে। কখনো টার্ন থাকে। এ কারণে আমাদের উইকেটে সাব্বিরের মতো ব্যাটসম্যানদের খেলতে একটু অসুবিধা হয়।
আমরা জানি, ব্যাট-বল দুটোতেই সে স্বচ্ছন্দ। তবে বোলিংয়ের কথা বললে, শুরুতে নিয়মিত বোলিং করত। বোলিংটা তখন ভালোই ছিল। কিন্তু দলের চাহিদা মেনে ক্রমেই ব্যাটিংয়ে নজর দেওয়ায় বোলিং আগের মতো নিয়মিত করা হয় না।
নিঃসন্দেহে বোলিংয়ের চেয়ে তার ব্যাটিং ভালো। আরেকটি বিশেষ গুণ, অসাধারণ ফিল্ডার। আরেকটু পরিশ্রম করলে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হতে পারবে। সাব্বিরের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক স্ট্রোক খেলার সামর্থ্য। যেকোনো পরিস্থিতিতে স্ট্রোক খেলতে পারে। ব্যাটিংয়ের সময় ওর মাথা বেশ ঠান্ডা। ব্যাটিংয়ে বড় দুর্বলতার কথা বললে, পর্যাপ্ত সিঙ্গেলস নিতে পারে না। প্রচুর সিঙ্গেল বের করতে পারলে বড় রান করতে পারবে। তাতে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা থাকবে। চার-ছয় মারতে যতটা পারঙ্গম, সিঙ্গেলসে ততটা নয়। আশা করি, এ দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে উঠবে।
ব্যক্তিগতভাবে সাব্বিরকে নিয়মিত টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবে দেখতে চাইব। আমার বিশ্বাস, টেস্টে সে অনেক ভালো করতে পারবে। তবে সে জন্য তাঁকে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে আরও ভালো করতে হবে। যে ধরনের ব্যাটিং সে করে, তাতে ফার্স্ট ক্লাসে আরও বড় রান পাওয়ার কথা। টেস্টের জন্য সে ফিট। টেকনিক ভালো আছে। এখন এ সংস্করণের জন্য মেজাজ-মানসিকতায় আরও উন্নতি করতে হবে। তাতে টেস্ট দলেও জায়গা করে নিতে পারবে। প্রত্যাশা করি, ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই ভালো করতে পারবে সাব্বির।
ConversionConversion EmoticonEmoticon