সৌম্য সরকারের জন্য এ বছরের প্রথম সপ্তাহ সুসংবাদের ডালি সাজিয়ে এসেছিল! প্রিমিয়ার লিগে জিতল তাঁর দল প্রাইম ব্যাংক, ফাইনালে ৭ ছক্কা ৭ চারে ৯৭ করে ম্যাচসেরা, এরপর কেবল ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া। বলা যায়, বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে চমকই ছিলেন সৌম্য। মাত্র একটি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেললেন ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে! এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অনেক প্রাপ্তি আছে। এর মধ্যে অন্যতম সৌম্য; বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা আবিষ্কার!
সৌম্যর তখন বছর তিনেক বয়স। অফিস থেকে ফেরার পথে ছোট্ট একটা ব্যাট আর একটা টেনিস বল নিয়ে এলেন বাবা কিশোরী মোহন সরকার। সেদিনের গল্পটা সৌম্যর বাবার মুখ থেকেই না হয় শুনুন, ‘ব্যাটটা তুলে দিতেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট ধরল বাঁ হাতে। বল ছুড়ে দিতেই শট খেলতে শুরু করল। অবাক হয়ে দেখলাম, বয়সের তুলনায় ওর টাইমিং ও ফুটওয়ার্ক যথেষ্ট নিখুঁত! বুঝলাম, আমার ছেলে ক্রিকেট প্রতিভা নিয়ে জন্মেছে।’
সেই প্রতিভার খানিক ঝলক দর্শকেরা এবার দেখেছে বিশ্বকাপে। একটি ফিফটিসহ ছয় ম্যাচে ২৯.১৭ গড়ে ১৭৫ রান করা সৌম্যের মধ্যে দারুণ ভবিষ্যৎ দেখছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। প্রত্যয়দীপ্ত ব্যাটিং, দৃষ্টিনন্দন সব শটে আলাদা নজর কেড়েছেন ২২ বছর বয়সী এ বাঁহাতি। নিজের ব্যাটিং নিয়ে কিন্তু প্রচণ্ড বিনয়ী সৌম্য। বললেন, ‘আসলে একেক ব্যাটসম্যানের একেক স্টাইল। আমারটা হয়তো কারও কারও ভালো লেগেছে।’
বিশ্বকাপের আগে কন্ডিশন নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রতিকূল কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিলেন কীভাবে? সৌম্য বললেন, ‘ওখানকার বাউন্সি পিচ ছিল ঠিকই। তবে এমন নিশ্চয় নয়, ভালো লেংথের বলে মাথায় লাগবে! ওটা ‘‘ট্রু উইকেট’’। অন্যরা খেলতে পারলে আমি পারব না কেন? এই সাহস নিয়েই খেলেছি। তা ছাড়া বিশ্বকাপের আগে যে ১২ দিন অনুশীলন করেছিলাম, সেটাও কাজ দিয়েছে। মাশরাফি ভাই প্রায় বলতেন, বুকে সাহস নিয়ে খেলবা। ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই।’
বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি ওপেনার হিসেবে। কিন্তু প্রায় নিয়মিত খেলতে হয়েছে তিন নম্বরে। ওই পজিশনেই খেললেন যথেষ্ট স্বচ্ছন্দে। সাফল্যের গল্পটা শোনালেন এভাবে, ‘বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে বলেছিলাম, দল যেখানে খেলাতে চায়, সেখানেই খেলতে আমি প্রস্তুত। টিম ম্যানেজমেন্ট যখন তিন নম্বরে খেলাতে চাইল, আমি সেখানেই নিজের কাজটা ঠিকমতো করার চেষ্টা করেছি। মানসিকভাবে তৈরিই ছিলাম। ভবিষ্যতেও দল যেখানে চাইবে সেখানেই খেলব।’
স্বপ্নের মতো দুটো মাস কাটল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে। নিশ্চয় বহু মুহূর্ত জমা হয়েছে মনে। এর মধ্যে প্রিয় মুহূর্ত কোনটি? সৌম্য বললেন, ‘বিশ্বকাপে প্রথম যেদিন প্রথম খেলতে নামলাম (আফগানিস্তানের বিপক্ষে), সেটিই ছিল প্রিয় মুহূর্ত। শুরু থেকেই রোমাঞ্চিত ছিলাম। চাপ না নিয়ে বরং উপভোগ করেছি সবকিছু।’
বিশ্বকাপে খেলা নিজের ইনিংসের মধ্যে কোনটিকে এগিয়ে রাখবেন? নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা ৫১ রানকে এগিয়ে রাখলেন। কারণ হিসেবে বললেন, ‘ফিফটি বলে নয়; প্রতিপক্ষ, পরিস্থিতি ও উইকেট-এ তিনের প্রেক্ষাপটে বড় ইনিংস খেলা খুব কঠিন ছিল বলেই এটি এগিয়ে রাখছি।’
বিশ্বকাপ শেষে এ মুহূর্তে নিজ বাড়ি সাতক্ষীরায়। ফোনের ওপাশ থেকেই মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচি ভেসে আসছে অবিরত। মানুষের এমন ভালোবাসা কেমন লাগছে? সৌম্য হাসলেন, ‘অন্যরকম লাগছে। আমাকে নিয়ে মানুষের এমন আগ্রহ, আগে বুঝিনি। প্রথম বিশ্বকাপ তো...।’
দল প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে, স্বাভাবিকভাবে সবার মতোই উচ্ছ্বসিত। দলের সাফল্যের মধ্যেও মনে একটা আক্ষেপ আছে। বললেন, ‘স্বপ্নটা অনেক বড়ই ছিল। সেটা সেভাবে পূরণ হয়নি। চেয়েছিলাম এমন ইনিংস খেলব যেটি মানুষ বহুদিন মনে রাখবে। চেয়েছিলাম বিশ্বকাপে নিজেকে চেনাব; সেটা পুরোটা হয়নি।’
আসলে কি তাই? হয়তো তীব্র আলো হয়ে জ্বলে উঠতে হয়তো পারেননি, তবে সকালের কোমল সূর্যোদয়ের মতোই কিন্তু ঠিকঠাক জানান দিয়েছেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয়ই বাড়বে তেজটাও।
সৌম্যর তখন বছর তিনেক বয়স। অফিস থেকে ফেরার পথে ছোট্ট একটা ব্যাট আর একটা টেনিস বল নিয়ে এলেন বাবা কিশোরী মোহন সরকার। সেদিনের গল্পটা সৌম্যর বাবার মুখ থেকেই না হয় শুনুন, ‘ব্যাটটা তুলে দিতেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট ধরল বাঁ হাতে। বল ছুড়ে দিতেই শট খেলতে শুরু করল। অবাক হয়ে দেখলাম, বয়সের তুলনায় ওর টাইমিং ও ফুটওয়ার্ক যথেষ্ট নিখুঁত! বুঝলাম, আমার ছেলে ক্রিকেট প্রতিভা নিয়ে জন্মেছে।’
সেই প্রতিভার খানিক ঝলক দর্শকেরা এবার দেখেছে বিশ্বকাপে। একটি ফিফটিসহ ছয় ম্যাচে ২৯.১৭ গড়ে ১৭৫ রান করা সৌম্যের মধ্যে দারুণ ভবিষ্যৎ দেখছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। প্রত্যয়দীপ্ত ব্যাটিং, দৃষ্টিনন্দন সব শটে আলাদা নজর কেড়েছেন ২২ বছর বয়সী এ বাঁহাতি। নিজের ব্যাটিং নিয়ে কিন্তু প্রচণ্ড বিনয়ী সৌম্য। বললেন, ‘আসলে একেক ব্যাটসম্যানের একেক স্টাইল। আমারটা হয়তো কারও কারও ভালো লেগেছে।’
বিশ্বকাপের আগে কন্ডিশন নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রতিকূল কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিলেন কীভাবে? সৌম্য বললেন, ‘ওখানকার বাউন্সি পিচ ছিল ঠিকই। তবে এমন নিশ্চয় নয়, ভালো লেংথের বলে মাথায় লাগবে! ওটা ‘‘ট্রু উইকেট’’। অন্যরা খেলতে পারলে আমি পারব না কেন? এই সাহস নিয়েই খেলেছি। তা ছাড়া বিশ্বকাপের আগে যে ১২ দিন অনুশীলন করেছিলাম, সেটাও কাজ দিয়েছে। মাশরাফি ভাই প্রায় বলতেন, বুকে সাহস নিয়ে খেলবা। ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই।’
বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি ওপেনার হিসেবে। কিন্তু প্রায় নিয়মিত খেলতে হয়েছে তিন নম্বরে। ওই পজিশনেই খেললেন যথেষ্ট স্বচ্ছন্দে। সাফল্যের গল্পটা শোনালেন এভাবে, ‘বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে বলেছিলাম, দল যেখানে খেলাতে চায়, সেখানেই খেলতে আমি প্রস্তুত। টিম ম্যানেজমেন্ট যখন তিন নম্বরে খেলাতে চাইল, আমি সেখানেই নিজের কাজটা ঠিকমতো করার চেষ্টা করেছি। মানসিকভাবে তৈরিই ছিলাম। ভবিষ্যতেও দল যেখানে চাইবে সেখানেই খেলব।’
স্বপ্নের মতো দুটো মাস কাটল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে। নিশ্চয় বহু মুহূর্ত জমা হয়েছে মনে। এর মধ্যে প্রিয় মুহূর্ত কোনটি? সৌম্য বললেন, ‘বিশ্বকাপে প্রথম যেদিন প্রথম খেলতে নামলাম (আফগানিস্তানের বিপক্ষে), সেটিই ছিল প্রিয় মুহূর্ত। শুরু থেকেই রোমাঞ্চিত ছিলাম। চাপ না নিয়ে বরং উপভোগ করেছি সবকিছু।’
বিশ্বকাপে খেলা নিজের ইনিংসের মধ্যে কোনটিকে এগিয়ে রাখবেন? নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা ৫১ রানকে এগিয়ে রাখলেন। কারণ হিসেবে বললেন, ‘ফিফটি বলে নয়; প্রতিপক্ষ, পরিস্থিতি ও উইকেট-এ তিনের প্রেক্ষাপটে বড় ইনিংস খেলা খুব কঠিন ছিল বলেই এটি এগিয়ে রাখছি।’
বিশ্বকাপ শেষে এ মুহূর্তে নিজ বাড়ি সাতক্ষীরায়। ফোনের ওপাশ থেকেই মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচি ভেসে আসছে অবিরত। মানুষের এমন ভালোবাসা কেমন লাগছে? সৌম্য হাসলেন, ‘অন্যরকম লাগছে। আমাকে নিয়ে মানুষের এমন আগ্রহ, আগে বুঝিনি। প্রথম বিশ্বকাপ তো...।’
দল প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে, স্বাভাবিকভাবে সবার মতোই উচ্ছ্বসিত। দলের সাফল্যের মধ্যেও মনে একটা আক্ষেপ আছে। বললেন, ‘স্বপ্নটা অনেক বড়ই ছিল। সেটা সেভাবে পূরণ হয়নি। চেয়েছিলাম এমন ইনিংস খেলব যেটি মানুষ বহুদিন মনে রাখবে। চেয়েছিলাম বিশ্বকাপে নিজেকে চেনাব; সেটা পুরোটা হয়নি।’
আসলে কি তাই? হয়তো তীব্র আলো হয়ে জ্বলে উঠতে হয়তো পারেননি, তবে সকালের কোমল সূর্যোদয়ের মতোই কিন্তু ঠিকঠাক জানান দিয়েছেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয়ই বাড়বে তেজটাও।
ConversionConversion EmoticonEmoticon