BDNow24 News

রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশের জয়

কাইল কোয়েটজারের শতকে স্কটল্যান্ড ৮ উইকেটে তোলে ৩১৮ রান, যা বিশ্বকাপে দেশটির প্রথম তিনশ’ পেরুনো ইনিংস। এত বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নামার আগেই একটা ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পাওয়া উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এনামুল হক ব্যাট করতে নামতে পারেননি। তবে তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ভিত গড়ে দেওয়া জুটির পর মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমানের দৃঢ়তাভরা ব্যাটিংয়ে ১১ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেয়া ৩১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৪ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে রান তাড়া করার এই রেকর্ড ভাঙার পথে বিশ্বকাপে প্রথম তিনশ' ছাড়ানো ইনিংস খেলল তারা।
এনামুলের জায়গায় তামিমের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা সৌম্য সরকার দলের ৫ রানেই বিদায় নেন। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রান তোলার গতি পড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ম্যাচের কোনো সময়ই মনে হয়নি, চাপে পড়েছে মাশরাফিরা।
দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ও মাহমুদুল্লাহর ১৩৯ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে যে কোনো উইকেটে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগের বড় জুটিটি ছিল মুশফিক ও সাকিবের। এবারের আসরেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১১৪ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দুই জন।
ইয়ান ওয়ার্ডলর লেগস্টাম্পের অনেক বাইরের একটি বলে বোল্ড হয়ে মাহমুদুল্লাহর বিদায়ে ভাঙে ২১.৪ ওভার স্থায়ী দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ৬২ বলে খেলা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৬২ রানের ইনিংসটি ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় গড়া।
মুশফিকের সঙ্গে ৫৭ রানের আরেকটি জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তামিম। মাত্র ৫ রানের জন্য শতক পাননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জস ডেভির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়া তামিমের ১০০ বলের ইনিংসটি সাজানো ৯টি চার ও ১টি ছক্কায়।
২০১ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিমের বিদায়ের কোনো ছাপ বাংলাদেশ ইনিংসে পড়তে দেননি মুশফিক ও সাকিব।
৬টি চার ও দুটি ছক্কায় ৪২ বলে ৬০ রানের দাপুটে ইনিংস খেলেন মুশফিক। বল তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে তার বিদায় নেয়ার সময় প্রয়োজন ছিল ৭২ বলে ৭২ রান।
মুশফিকের ৪৬ রানের জুটি গড়া সাকিব সাব্বির রহমানকে নিয়ে বাকি কাজটুকু সহজেই সারেন। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে ৬১ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে। আর তাতেই বিশ্বকাপে প্রথমবারের তিনশ’ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের কৃতিত্ব দেখায় বাংলাদেশ।
৫২ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। সাব্বির (৪০ বলে অপরাজিত ৪২) পরপর দুটি বল ঠেকিয়ে এই অলরাউন্ডারকে অর্ধশতক করার সুযোগ করে দেন। পরের ওভারের প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে অর্ধশতকে পৌঁছানোর সঙ্গে দলকে জয়ও এনে দেন সাকিব।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ হয়। ৩৮ রানে স্কটল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেয় তারা।
তৃতীয় ওভারেই মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে কাভারে মাহমুদুল্লাহর হাতে ধরা পড়েন ক্যালাম ম্যাকলয়েড। দশম ওভারে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। হ্যামিশ গার্ডিনারকে সৌম্যর ক্যাচে পরিণত করেন এই তরুণ পেসার।
৩৮ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া স্কটল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে কোয়েটজার ও ম্যাট মাচানের ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়েন তারা।
প্রথমবারের মতো বল করতে এসেই ১৪.১ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন সাব্বির। মাচানের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ওয়ানডেতে নিজের প্রথম উইকেট নেন এই লেগস্পিনার।
চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক প্রেস্টন মমসেনের সঙ্গে কোয়েটজারের ১৪১ রানের দারুণ জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় স্কটল্যান্ড।
৩৮ বলে ৩৯ রান করে মমসেনকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা নাসির হোসেন। পরে কোয়েটজারকেও ফেরান তিনি।
১৩৪ বলে ১৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৫৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন কোয়েটজার। উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যানের শতকটি বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্কটল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম।
ম্যাথু ক্রসের সঙ্গে অ্যান্ডি বেরিংটনের ৩৯ রানের জুটিতে তিনশ’ রান পার হয় স্কল্যান্ডের সংগ্রহ। ১৬ বলে ২৬ রান করা বেরিংটনকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন তাসকিন। 

তাসকিনের সেই ওভারের প্রথম বলে জীবন পেলেও শেষ বলে আর পারেননি ক্রস। সাব্বিরের ক্যাচে পরিণত হয়ে বিদায় নেন তিনি। ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তাসকিনই বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার।
Previous
Next Post »
Thanks for your comment