বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার সাক্ষীকে জেরা করছেন তাঁর আইনজীবীরা। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে এ মামলার সাক্ষী সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম ড. মো. হাফিজুর রহমানের জেরার জন্য দিন ছিল।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে হাফিজুর রহমানকে জেরা করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুর রাজ্জাক।
গত ১০ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংক উত্তরা শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এস এম ইসমাইল, জনতা ব্যাংক সাত মসজিদ শাখার জিএম শেখ মকবুল ও ফাহমিদা রহমানকে জেরা করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। জেরা শেষে আদালতে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম ড. মো. হাফিজুর রহমান সাক্ষ্য দেন। তাঁকেই আজ জেরা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন সোনালী ব্যাংক হেড অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার আমির উদ্দিন ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার পরিতোষ চন্দ্র দে।
এদিন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তাঁর পক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, জয়নুল আবেদীন মেজবা হাজিরা দেন।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দুই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুবেদ রায়।
ConversionConversion EmoticonEmoticon