BDNow24 News

মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মাকে পিটিয়ে হত্যা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার পল্লীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তাঁর মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার ভাটরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত খুশী বেগম (৪৫) ওই গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলামের স্ত্রী। আটককৃতরা হলেন একই গ্রামের হানেফ আলীর স্ত্রী নিরালা বেগম ও তাঁর ননদ রহিমা বেগম।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার পল্লীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তাঁর মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশ আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার ভাটরা গ্রামের হানেফ আলীর স্ত্রী নিরালা বেগম ও তাঁর ননদ রহিমা বেগমকে আটক করে। ছবি : এনটিভি
গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, ভাটরা গ্রামের প্রভাবশালী হানেফ আলী বেশ কয়েক বছর বিদেশ থাকার পর এক বছর আগে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি প্রতিবেশী কামরুল ইসলামের পরিবারের ওপর নানাভাবে অত্যাচার করে আসছিলেন। বিশেষ করে দরিদ্র কামরুলের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়েকে (২৫) প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন হানেফ আলী। গত রোজার মাসে এক রাতে হানেফ আলী ওই তরুণীর ঘরে ঢুকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা চালান। এ সময় তরুণীর চিৎকারে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে হানেফ আলী পালিয়ে যান। এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিশ বসলেও বিচার পায়নি কামরুলের পরিবার। 
সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার রাতেও উভয় পরিবারের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে আজ বুধবার দুপুরে কামরুলের স্ত্রী খুশী বেগম বাজার থেকে কাপড় কিনে বাড়ির ফেরার পথে রাস্তার উপরে হানেফ আলী, তাঁর স্ত্রী নিরালা বেগম ও পরিবারের লোকজন মিলে তাঁর গতিরোধ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা খুশী বেগমকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন বলে জানান খুশী বেগমের ছেলে খায়রুল ইসলাম। তিনি জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় খুশী বেগমকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
কামরুলের প্রতিবেশী ইমান আলী জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছাড়াও দুই পরিবারের মধ্যে জমিজমা নিয়েও বিরোধ চলছিল। এর আগেও খুশী বেগমের ছোট বোন জামাইকে হানেফ আলী ও তাঁর পরিবারের লোকজন কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বদের কাছে বিচার চাইলেও বিচার হয়নি। বার বার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ায় আজ এই হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 
খুশী বেগমের মা মর্জিনা বেগম জানান, বার বার আমার মেয়ের পরিবার অত্যাচারিত হলেও বিচার পায়নি। স্থানীয় মাতব্বর নান্নুর কাছে বিচার চাইলেও অজ্ঞাত কারণে বিচার হয়নি। উপরন্তু হানেফ ও লতিফ বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদেরও হুমকি দিয়েছেন। 
একই এলাকার আব্দুর রশিদ জানালেন, হানেফ আলী বার বার পরিবারটির ওপর অত্যাচার চালিয়েছেন। গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হলেও হানেফ আলী কারো কথা শোনেননি। তবে এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হানেফ গা-ঢাকা দিয়েছেন। 
নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ খন্দকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ভাটরা গ্রামের বিদেশ ফেরত হানেফ আলী দেশে ফেরার পর থেকেই একই গ্রামের কামরুল ইসলামের মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন হানেফ আলীকে সতর্কও করা হয়। 
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আমিনুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিরালা বেগম ও রহিমা বেগমকে আটক করা হয়েছে। তবে হানেফ আলী ও তাঁর ভাই আব্দুল লতিফ হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। 
Previous
Next Post »
Thanks for your comment